শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
রাজশাহীর সংরক্ষিত পুরাকীর্তি বড়কুঠি ছাড়লেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী

রাজশাহীর সংরক্ষিত পুরাকীর্তি বড়কুঠি ছাড়লেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে রাজশাহীর সংরক্ষিত পুরাকীর্তি বড়কুঠি ছাড়লেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। গতকাল রবিবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একজন কাস্টডিয়ান ও একজন প্রকৌশলীসহ ছয় সদস্যের একটি দল রাজশাহীতে আসেন। তারা ঐতিহ্যবাহী এই ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষে দখলমুক্ত করার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাজশাহীর জেলা প্রশাসকে চিঠি দেন। এর ভেতরে বসবাসকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী তার মালামাল সরিয়ে নেন। কিন্তু এর চাবি হস্তান্তর করা হয়নি।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বড়কুঠির প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার গত বছর ৩ মে রাজশাহীর বড়কুঠিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করেছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে গত বছর ২১ জুন জারিকৃত সংরক্ষণ সম্পর্কীয় প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ২৬ জুলাই এই ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষে দখলমুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এই চিঠির পরিপেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অধিকন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী পরিবার পরিজন নিয়ে রীতিমতো এই সংরক্ষিত পুরাকীর্তির ভেতরে বসবাস করছিলেন।

রবিবার তারা অন্যত্র চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে রাজশাহীর সর্বপ্রাচীন দালানটি ফাঁকা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, এই পুরাকীর্তিকে কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বাইরে ভাড়া দেয়া হয়।

গত শুক্রবার এই ভবনটি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একজন কর্মচারীর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা মাত্র এক হাজার টাকায় এটি ভাড়া দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।

রবিবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের রংপুর কাস্টডিয়ান অফিস থেকে কাস্টডিয়ান আবু সাইদ ইনাম তানভিরুলের নেতৃত্বে একজন উপসহকারী প্রকৌশলী ও চারজন মালি রাজশাহীতে আসেন। মালিরা এসে ভবনটি পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেন। তবে এটি সংস্কার এবং সংরক্ষণের জন্য এই ভবনের একটি নকশা তৈরি করার জন্য সকাল থেকেই তারা বসেছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় কর্মচারীরা এই ভবনের চাবি হন্তান্তর করেননি।

আবু সাইদ বলেন, দীর্ঘদিন মেরামত না করায় ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য ভেতরে বসবাসকারী কর্মচারীর পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ভবনটি জরুরিভিত্তিতে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা দরকার। চলতি অর্থ বছরেই ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তবে চাবি না পেয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের লোকজন ভেতরের ড্রয়িংয়ের কাজ শুরু রতে পারেননি।

বিকাল ৫টার সময় আবু সাইদ বলেন, আজকের দিন শেষ হয়ে গেছে। তারা চলে যাচ্ছেন। আপাতত মাহবুবুর রহমান ও শাহজাহান আলী নামে দুইজন মালি কাম প্রহরীর দায়িত্বে থাকবেন। আর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটি হস্তান্তরের বিষয়টি ঠিক করবেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের লোকেরা তার কাছে এসেছিলেন। তাদের চিঠিটা ভাসাভাসা। গেজেটসহ সুনির্দিষ্ট চিঠি নিয়ে আসার জন্য তিনি বলেছেন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, সংরক্ষিত পুরাকীর্তির ভেতরে এ ধরনের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না।

চাবি দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চিকিৎসকের কাছে থাকার কারণে কথা বলতে পারেননি।

অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কোনো এক সময় ডাচ ব্যবসায়ীরা বড় কুঠি ভবন নির্মাণ করেন। ব্যবসায়ীদের কাছে এটা ‘ডাচ্ ফ্যাক্টরি’ হিসেবে পরিচিত ছিল। দেশভাগের পর ১৯৫১ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে বড়কুঠি সরকারি সম্পত্তিতে পরিণত হয় এবং খাদ্য বিভাগের অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯৫৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে বড়কুঠি বিশ্ববিদ্যালয়কে হস্তান্তর করা হয়।

মতিহার বার্তা ডট কম – ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply